Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : মা কালীর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ঋকবেদের দেবীসূক্তে। ঈশ্বরকে যে রূপে কল্পনা করেন, সেই প্রকৃতিই কালী। যিনি সৃষ্টি করেন, বিনাশও করেন। দেবীসত্ত্বাকে কেন্দ্র করে যে একাধিক ধর্ম গ্রন্থ রচিত হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল দেবীভাগবত পুরাণ। মহাবিদ্যা শব্দকে বিশ্লেষণ করলে পাই মহা’ অর্থাৎ মহান, ‘বিদ্যা’ অর্থাৎ রূপ বা প্রকাশ। বিষ্ণুর আত্মপ্রকাশ তেমনই শক্তির দশটি রূপের প্রত্যেকটি নারায়ণের ওই অবতার গুলির নারীরূপ।
কালী প্রথম মহাবিদ্যা —
‘কালী’ অর্থাৎ যিনি কালকে হরণ করেছেন। দেবী কালিকা চতুর্ভুজা, বাম হাতের উপরে খড়্গ, নীচের হাতে মুণ্ড। ডানহাতে বরাভয় মুদ্রা। দিগম্বরী দেবীর গলায় মুণ্ডমালা। শবরূপী শিবের উপর বিপরীত রতাতুরা অবস্থায় দাঁড়িয়ে।
তারা দ্বিতীয় মহাবিদ্যা —-
শবরূপী শিবের হৃদয়ের দাঁড়িয়ে দেবী। ডান পা সামনে, বাম পা কিছুটা পিছনে। চতুর্ভুজা দেবীর হাতে খড়্গ, নীল পদ্ম, কর্তৃকা ও খর্পর। দেবী খর্বাকৃতি, লম্বোদর, নীলবর্ণ। তিনি বাঘ ছাল পরিহিতা। মাথায় জটা, সেখানে সাপের অধিষ্ঠান।
ষোড়শী তৃতীয় মহাবিদ্যা —-
ইনি ত্রিপুরসুন্দরী বা ললিতা নামেও প্রসিদ্ধ। পূর্ণতার প্রতীক তিনি। কৃষ্ণবর্ণ, শিবের উপর উপবিষ্টা, ষোড়শবর্ষীয়া বালিকা। চতুর্ভূজা দেবীর দুই হাতে তীরধনুক। তিনি সর্বসৌভাগ্যদায়িনী।
ভুবনেশ্বরী চতুর্থ মহাবিদ্যা —-
মহাদেবের লীলা সহচরী দেবী ভুবনেশ্বরী। বিশ্বের সমস্ত খারাপকে ধ্বংস করেন। রক্তবর্ণা দেবী সদাহাস্যময়ী। চতুর্ভুজা দেবীর একহাতে অঙ্কুশ, অন্য হাতে পাশ। বাকি দুই হাতে বরাভয় মুদ্রা।
আরো পড়ুন :- শুভেন্দুর পিছনে ২০ কোটি টাকা খরচ করেছে মমতা, দাবি শুভেন্দুর
ভৈরবী পঞ্চম মহাবিদ্যা —-
সহস্র সূর্যের মতো উজ্জ্বল তাম্রবর্ণা দেবীর মাথায় জটা এবং কপালে শোভিত চন্দ্রকলা। রক্তবস্ত্র পরিহিতা, গলায় মুণ্ডমালা। বাম হাতে পুস্তক ও অভয় মুদ্রা। ডান হাতে বর মুদ্রা ও জপমালা।
ছিন্নমস্তা ষষ্ঠ মহাবিদ্যা —-
দ্বিভুজা দেবী দিগম্বরী। বাম হাতে নিজের কাটা মুণ্ড। ডান হাতে খর্পর। গলায় মুণ্ডমালা কাটা গলা থেকে নির্গত তিনটি রক্ত ধারার একটি দেবী নিজেই পান করছেন, অপর দুটি ধারা পান করছেন তাঁর দুই সহচরী। বিপরীত ভাবে রতিতে আসক্ত কামদেব ও রতির উপর দণ্ডায়মান।
আরো পড়ুন :- মমতার মিম বানিয়ে গ্রেফতার যুবক ! বিরোধীদের দাবি, বাক স্বাধীনতা খণ্ডনের চেষ্টা
ধূমাবতী সপ্তম মহাবিদ্যা —-
ধূমাবতী বিধবা রূপধারিনী দেবী। তিনি কাকধ্বজ রথে চড়ে রয়েছেন। তাঁর গায়ের রং বিবর্ণ, পরণে মলিনবসন। এক হাতে কুলো, অন্য হাতে বর মুদ্রা। তিনি দুর্ভিক্ষ, অভাব, সংকটের দেবী। তুমি বৈধব্য বেশেই পূজিত হবে। পার্বতী যখন দক্ষ যজ্ঞের আগুনে নিজেকে সঁপে দিলেন তখন সেই আগুন থেকে যে ধোঁয়া নির্গত হল তাতেই দেবী ধূমাবতী প্রকট হলেন।
বগলা অষ্টম মহাবিদ্যা —-
রত্ন সিংহাসনে আসীন দেবী বগলামুখী পীতবর্ণ, পীতবসনা। দ্বিভুজা দেবীর এক হাতে মুদ্গর অপর হাতে ধরা শত্রুর জিহ্বা। তবে কোথাও কোথাও চতুর্ভুজা দেখা যায়। তাঁর আবির্ভাবে প্রলয় শান্ত হয়ে সৃষ্টি রক্ষা পেল এবং দেবী বৈষ্ণবী হলেন।
আরো পড়ুন :– আগামী দিনে ২৫% বিদ্যুৎ বিল কম আসবে আপনার !
মাতঙ্গী নবম মহাবিদ্যা —–
মাতঙ্গী দেবী সর্বসিদ্ধিদায়িনী। শ্যাম বর্ণ, অর্ধচন্দ্র ধারিণী, চতুর্ভুজা দেবীর হাতে থাকে খড়গ, পাশ ও অঙ্কুশ। তাঁর গায়ের রং নীল।
কমলা দশমহাবিদ্যা —-
কমলা শুদ্ধ চৈতন্যের দেবী। তিনি লক্ষ্মী রূপে বিষ্ণুকে পতিরূপে বরণ করেছেন। দ্বিভুজা থেকে অষ্টভুজা পর্যন্ত কমলা রূপ পাওয়া যায়। দেবাসুরের সমুদ্রমন্থনের ফলস্বরূপ তাঁর আবির্ভাব। তিনি পদ্মাসনা স্বর্ণবর্ণা। তাই দেবী সমৃদ্ধি, সম্পদ, উর্বরতা ও সৌভাগ্যদায়িনী।
আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল