ভক্তিবাদী মতুয়া সমাজের প্রকৃত মতাদর্শ কি ? জানুন আসল কাহিনী

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : মতুয়া আন্দোলন বৈষ্ণব ঘরানার আন্দোলন। সেখানে ভক্তিবাদের কথা আছে, গুরুবাদের কথা আছে। হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ তারপর প্রমথরঞ্জন ঠাকুর বংশানুক্রমে এই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের গুরু। এই সম্প্রদায় শুধু ধর্মীয় তা নয়, এতে একটা সর্বজনীন আবেদন ছিল। যা গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের থেকে আলাদা। যদিও ’৪৭-র আগে এর মূল ব্যাপ্তি ছিল পূর্ব বাংলায় মূলত নমঃশূদ্রদের মধ্যে। দেশভাগের পর কিছু লোকজন রয়ে গেলেন পশ্চিমবঙ্গে। বহু লোককে পাঠিয়ে দেওয়া হল দণ্ডকারণ্যে। কিছু লোককে পাঠিয়ে দেওয়া হল আন্দামানে। অর্থাৎ এই সম্প্রদায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল।

পিআর ঠাকুর এই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লোকজনকে আধ্যাত্মিক কাঠামোর মধ্যে আনার চেষ্টা করলেন। এতে মতুয়া সম্প্রদায়ের পুনর্জন্ম হল সামাজিক-ধর্মীয় আন্দোলনে। যদি ভক্তি আন্দোলনের ঘরানায় বলি, কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কথা জানা নেই, যাদের গুপ্ত একটা সংবিধান আছে। তার একটা সংগঠন আছে, সাংগঠনিক কাঠামো আছে। সেটা ঠাকুরনগরে তৈরি হলেও শাখা-প্রশাখা পিআর ঠাকুর ছড়িয়ে দিলেন সারা ভারতে। দণ্ডকারণ্য, আন্দামান বা বিহার ও অসমে নমঃশূদ্র মতুয়ারা ছড়িয়ে ছিল, তাঁদের নিয়ে এলেন একটা সংঠনের আওতায়। বাইরে থেকে তাঁরা ছড়িয়ে গেলেও মনের দিক থেকে এক জায়গায় এলেন।

diana collage

স্থানীয় উচ্চবর্ণের হিন্দু আধিপত্যের বিরুদ্ধে সামাজিক সংগঠন হিসাবে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্ম। আত্মদর্শন থেকে তাঁর উপলব্ধি হয়, শুধু হরিনামেই তিনি মুক্তি দিতে পারবেন বঞ্চিত নিচুতলার মানুষকে। অত্যাচারী ব্রাহ্মণ জমিদারদের মুক্তি দিতে পারেন হরিচাঁদ, এই বিশ্বাস জন্মায় তাঁর ভ্ক্তদের মধ্যে। উচ্চবর্ণের হিন্দু ও প্রাতিষ্ঠানিক বৈষ্ণবরা হরিচাঁদের অনুগামীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাননি। হরিচাঁদের মৃত্যু হয় ১৮৭৮-এ। তাঁর ছেলে গুরুচাঁদের হাত ধরে এই সম্প্রদায় আরও বিকশিত হয়। ঐতিহ্যবাহী হিন্দুত্ব এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণববাদ, বৈষ্ণববাদের সহজিয়া ধারা থেকে গ্রহণ-বর্জনে তৈরি হয় ‘নতুন ধর্ম’।

গুরুচাঁদ এমন সমাজের কথা বলেন, যেখানে কোনও জাতপাতের বিভাজন নেই। ‘মতুয়া সকলে এক, জাতিভেদ নাই।’ মানবিক একটা বিশ্বাস, যাতে নেই লিঙ্গবৈষম্য। সমতার ধারণায় গ্রহণীয় নারীও। মতুয়া ধর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কীর্তন। এই কীর্তন বা নামগানই কঠিন সময়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের নমঃশূদ্র ভ্ক্তদের পাথেয়। সে কারণে আদর্শ পথ হল, ভক্তির সঙ্গে কর্মকে মিশিয়ে নেওয়া।

আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন