Murshidabad Teacher’s Death | সুপ্রিম নির্দেশে টেটের আতঙ্ক! হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু প্রাথমিক শিক্ষকের  

By Bangla News Dunia Dinesh

Published on:

বহরমপুর: টেট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়! সমস্ত শিক্ষককে টেট উত্তীর্ণ হতে হবে। সুপ্রিমকোর্টের এই নির্দেশের পরে রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে যায় শিক্ষক সমাজে। তাতেই বাড়ে মানসিক চাপ। আর এই মানসিক চাপই কেড়ে নিল মুর্শিদাবাদের এক প্রাথমিক শিক্ষকের প্রাণ। মৃতের নাম গিয়াসউদ্দিন শেখ। তাঁর বাড়ি বীরভূমের নলহাটি থানার বাঁধখেলা গ্রামে। তিনি মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম ব্লকের বারাতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ঘটনায় বুধবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুর জুড়ে শিক্ষক মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪১ বছর বয়সী গিয়াসউদ্দিন শেখ ২০১০ সালে শিক্ষকতার চাকরিতে যোগ দেন বারাতপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বাড়িতে তাঁর বাবা, মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় ২০৩০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যাদের চাকরি আছে সেই সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের ফের নতুন করে টেট পরীক্ষায় বসতে হবে এবং কৃতকার্য হলে তবেই তাদের চাকরি বলবৎ থাকবে। এই খবর শোনার পর থেকেই দুশ্চিন্তা ও মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন গিয়াসউদ্দিন শেখ। মঙ্গলবার রাতে ঘুমের মধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় গিয়াসউদ্দিনের।

পরিবারের একমাএ উপার্জনশীল ছিলেন তিনি। পরিবারের দাবি, তাঁদের পরিবারের কাউকে একটি চাকরি দেওয়া হোক। মৃত শিক্ষকের বাবা বলেন, “কিছুদিন আগেই খবর পায়, তারপর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। সারাদিন চিন্তা করত। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিল। নাবালক ছেলেমেয়ে রয়েছে। বৌমাও গৃহবধূ। ওর ওপরেই সংসার চলত। ওর ছেলে কিছুদিনের মধ্যেই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করবে। আমি চাই ওকে অন্তত পক্ষে একটা চাকরি দেওয়া হোক।”

মৃতের স্ত্রী গোলনেহার বিবি বলেন, “টেট আতঙ্কই ওঁর মৃত্যুর অন্যতম কারণ। আদালতের নির্দেশ শোনার পর থেকেই ও মানসিক অবসাদের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমরা ওঁর অপমৃত্যু নিয়ে আগামী দিনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ক্ষতিপূরণের দাবি তুলব।”

শিক্ষকের মা হাবিবা বিবি বলেন, “আমার ছেলে পড়াশুনা করে চাকরি পেয়েছিল। টেট নিয়ে আদালতের নির্দেশ আসার পর থেকেই চিন্তা করত। সকালে ঠিক ছিল। তারপর ঘুমের মধ্যেই শেষ হয়ে গেল। টেট পরীক্ষার চিন্তা ওকে গ্রাস করেছিল।”

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, শিক্ষকতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য টেট উত্তীর্ণ হতেই হবে। পদোন্নতির জন্যও টেট উত্তীর্ণ বাধ্যতামূলক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরই তৎপর হল এ রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ইতিমধ্যেই শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে জেলায় জেলায় কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে পর্ষদ।

Bangla News Dunia Dinesh

মন্তব্য করুন