Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- যুদ্ধে ইতি টানবেন নাকি চালিয়ে যাবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ৷ তবে রাশিয়ার অধিকৃত ক্রিমিয়া ফেরত পাওয়া এবং ন্যাটো-তে যোগদানের স্বপ্ন, কোনওটাই পূরণ হবে না ৷ হোয়াইট হাউসের বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগেই তা স্পষ্ট করে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷
সোমবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট-সহ ইউরোপের একাধিক দেশের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে ট্রাম্পের ৷ গুরুত্বপূর্ণ সেই বৈঠকের ঠিক আগে রবিবার তাঁর ‘ট্রুথ সোশালে’ এই প্রসঙ্গে পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ৷ লেখেন, “চাইলে রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধে এখনই ইতি টানতে পারেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ৷ আবার যুদ্ধ চালিয়েও যেতে পারেন ৷ তবে মনে রাখতে হবে যুদ্ধের শুরু কীভাবে হয়েছিল ৷” এরপর প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে খোঁচা দিয়ে ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে ট্রাম্পের স্পষ্ট বার্তা, “তবে ওবামার দেওয়া ক্রিমিয়া আর ফেরত পাবে না ইউক্রেন ৷ আর ন্যাটো-তেও ঢুকতে পারবে না তারা ৷ কিছু জিনিস অপরিবর্তনশীল ৷”
ট্রাম্পের পোস্টের পরই আমেরিকায় তাঁর পৌঁছন সংবাদ নিশ্চিত করে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন জেলেনস্কি ৷ সেখানে ক্রিমিয়ার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন তিনি ৷ লেখেন, “ওয়াশিংটনে পৌঁছে গিয়েছি ৷ বৈঠকে আমন্ত্রণের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানাই ৷ আমরা সকলে চাই, দ্রুত এই যুদ্ধ শেষ হয়ে শান্তি আসুক ৷ তবে আগের মতো নয় ৷ দেশের পূর্বে ডনবাস এবং ক্রিমিয়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল ইউক্রেন ৷ নিত্য নতুন হামলা চালানোর জন্য পুতিন এলাকাগুলিকে ব্যবহার করছে ৷”
এরপর দীর্ঘ পোস্টের শেষে তিনি লেখেন, “এই যুদ্ধ শুরু করে রাশিয়া ৷ সুতরাং, তাদেরকেই যুদ্ধে ইতি টানতে হবে ৷ আমার আশা ইউরোপীয় বন্ধু দেশগুলি এবং আমেরিকার যৌথ সাহায্যে রাশিয়াকে শান্তি স্থাপনে বাধ্য করা যেতে পারে ৷”
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য ফেব্রুয়ারি মাসে ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলেনস্কি ৷ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত 28 ফেব্রুয়ারির সেই বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের তীব্র সমালোচনা করতে শোনা যায় আমেরিকার দুই নেতাকে ৷ জেলেনস্কিকে অকৃতজ্ঞ বলেও কটাক্ষ করেন তাঁরা ৷ শুধু তাই নয়, বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে একে অপরকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করতেও দেখা যায় ৷ উল্লেখ্য, তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের প্রথম থেকেই ইউক্রেনের পাশে রয়েছে আমেরিকা ৷ কিন্তু ফেব্রুয়ারির সেই বৈঠকের পর দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে তীব্র জল্পনা শুরু হয় ৷ যদিও পরে তাঁর ব্যবহারের জন্য মার্কিন রাষ্ট্রনেতার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন জেলেনস্কি ৷
তারপর অবশ্য অনেক সময় কেটে গিয়েছে ৷ ফেব্রুয়ারির পর এপ্রিলে ভ্যাটিকেনে বৈঠক করেন জেলেনস্কি এবং ট্রাম্প ৷ ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকরা থাকেন এমন এলাকায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর হামলার নিন্দাও করেন আমেরিকার প্রথম নাগরিক । জুন মাসেও দেখা হয় দুই রাষ্ট্রনেতার ৷
এই আবহে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য শুক্রবার আলাস্কায় ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক সারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ৷ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক মজবুত করার কথা হলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি ট্রাম্প এবং পুতিন ৷