Bangla News Dunia, Pallab : ২০২৬ সালের বহু রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। বাংলা, অসম, কেরালা, তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির মতো গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলিতে ভোট হবে আগামী বছর, তবে তার আগে বিহারে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন দেশজুড়ে শুরু করেছে বিশেষ ভোটার কার্ড সংশোধনী কর্মসূচি। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য প্রতিটি রাজ্যের নির্বাচন কমিশনকে একযোগে সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে। মূলত নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি, পুরনোদের তথ্য সংশোধন এবং ডুপ্লিকেট নাম বাতিল করাই এই প্রক্রিয়ার মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন : ‘ভয় পাবেন না, বুক চিতিয়ে লড়ব’ ! সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা মিঠুনের
এই হালনাগাদ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে গিয়ে বহু নাগরিক আধার কার্ড, প্যান কার্ড বা রেশন কার্ড দেখিয়ে নিজেদের পরিচয় প্রমাণের চেষ্টা করছেন বলে জানা যায়। তবে নির্বাচন কমিশনের তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এসব নথি পরিচয় এবং ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা গেলেও নাগরিকত্বের বৈধ প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। এমনকি সুপ্রিম কোর্টও একাধিকবার এ বিষয়ে মত দিয়েছে যে, শুধুমাত্র EPIC কার্ড বা রেশন কার্ড নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে যথেষ্ট নয়। ফলে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত স্পষ্ট প্রমাণপত্র দাখিলের প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ভারতের নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন চারটি নথি রয়েছে যা একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচিত হতে প্রয়োজন। প্রথমত, জন্ম শংসাপত্র – এই নথি যদি যথাযথভাবে সঠিক সময়ে রেজিস্ট্রি করা থাকে এবং তাতে ভারতের মাটিতে জন্মের উল্লেখ থাকে, তবে তা নাগরিকত্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয়। দ্বিতীয়ত, বৈধ ভারতীয় পাসপোর্ট – যেটি শুধুমাত্র বিদেশ মন্ত্রক দ্বারা জারি করা হয় এবং নাগরিকত্ব স্পষ্টভাবে তাতে উল্লেখ থাকে। তৃতীয়ত, জাতীয়তা শংসাপত্র – রাজ্য সরকার বা জেলা প্রশাসনের তরফে নির্দিষ্ট যাচাইয়ের পর এই সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। চতুর্থত, নাগরিকত্ব বা রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট – ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের আওতায় এই নথি মূলত সেইসব বিদেশি নাগরিকদের প্রদান করা হয় যাঁরা ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন।
এই চারটি নথির মধ্যে যেকোনও একটি প্রমাণ হিসেবে থাকলেই একজন ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন বলে জানা যায় তবে তা সরকারি ঘোষণা করা হয়নি। ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করার সময় বা সংশোধনী আবেদনের ক্ষেত্রে অনেকেই ভুলভাবে ধারণা করেন যে আধার কার্ড থাকলেই যথেষ্ট। অথচ বাস্তবতা হলো, আধার কার্ড কেবলমাত্র একটি শনাক্তকরণ নথি, যা ইউআইডিএআই (UIDAI)-এর আওতায় জারি হয় এবং এতে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত কোনো প্রত্যক্ষ ঘোষণা নেই। ফলে ভবিষ্যতের জটিলতা এড়াতে এবং নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিরোধ এড়াতে উপরে উল্লেখিত চারটি নথি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।
বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে নাগরিকত্ব ইস্যু বরাবরই স্পর্শকাতর। NRC বা National Register of Citizens-এর মতো প্রকল্প চালু হওয়ার পর নাগরিকত্ব যাচাইয়ে কঠোরতা অনেক বেড়ে গেছে। অসমে দেখা গিয়েছিল বহু বছর ধরে বসবাসকারী ব্যক্তিদেরও নাম বাদ পড়েছে শুধুমাত্র উপযুক্ত নথির অভাবে। তাই ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি যেন দেশের অন্য কোনও রাজ্যে না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন আগেভাগেই সচেতনতা তৈরি করতে চাইছে। ইতিমধ্যে স্কুল-কলেজ, ব্লক অফিস ও পুরসভাগুলিতে প্রচার শুরু হয়েছে যাতে সাধারণ মানুষ জানতে পারেন কোন নথিগুলি নাগরিকত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং কোথা থেকে তা সংগ্রহ করা যায়।
আরও পড়ুন : টাকা না থাকলেও চালানো যাবে অ্যাকাউন্ট ! ব্যাংক গুলির তরফে বিরাট সুখবর
আরও পড়ুন : NEET UG 2025-র কাউন্সেলিং কবে ? জানুন সম্ভাব্য দিনক্ষণ, বিজ্ঞপ্তি এমসিসি-র