Primary 32000 Case: ‘দুর্নীতি হয়েছে, মানি ট্রান্সফার…’, ত্রিপুরার প্রসঙ্গ টানলেন বিচারপতি! ৩২ হাজার মামলায় আজ কী হলো?

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Primary 32000 Case: কলকাতা হাইকোর্টে প্রাথমিক ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ মামলার (Primary 32000 Case) ১৯তম দিনের শুনানি শেষ হয়েছে, যা রাজ্যের কয়েক হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে চলেছে। শুনানির এই পর্বে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (AG) কিশোর দত্ত বোর্ডের হয়ে সওয়াল করেন এবং ২০১৪ সালের টেট রিলাক্সেশন ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি বেসরকারি সংস্থার ভূমিকা নিয়ে জোরালো যুক্তি পেশ করেন। অন্যদিকে, বিচারপতি দুর্নীতি ও অর্থ লেনদেনের প্রসঙ্গ তুলে নিজের কঠোর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন, যা এই মামলায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

রিলাক্সেশন নিয়ে বোর্ডের যুক্তি

শুনানির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের MHRD এর অনুমোদন অনুযায়ী রিলাক্সেশন দেওয়ার বিষয়টি। অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে জানান যে, এই ছাড় সম্পূর্ণ নিয়ম মেনেই দেওয়া হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেন যে, চাকরির নিয়মানুযায়ী যোগদানের পর একটি নির্দিষ্ট সময়ের (২ বছর) মধ্যে প্রশিক্ষণ শেষ করার শর্ত ছিল।

বিচারপতি ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৬ সালের মার্চের মধ্যেকার সময়সীমা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, AG জানান যে কেন্দ্রীয় মানব উন্নয়ন মন্ত্রক (MHRD)-এর নির্দেশিকা এবং পরবর্তী সময়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ভিত্তি করেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। তিনি আরও যোগ করেন যে, ২০১৭ সালের সংশোধনী অনুযায়ী ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে ডি.এল.এড (D.El.Ed) প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করার নির্দেশিকাও পালন করা হয়েছে।

বিতর্কের কেন্দ্রে S বসু রায় & কোম্পানি-এর ভূমিকা

এই মামলার অন্যতম প্রধান বিতর্কিত বিষয় হলো S. Basu Roy & Company (SBRC) নামক একটি বেসরকারি সংস্থার ভূমিকা। অভিযোগ ছিল, বোর্ড বেআইনিভাবে এই সংস্থাকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট জেনারেল স্পষ্ট জানান যে, SBRC-কে নিয়োগের সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাদের কাজ প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা বা নম্বর দেওয়া ছিল না।

তিনি যুক্তি দেন, SBRC-এর দায়িত্ব ছিল মূলত বিপুল সংখ্যক অনলাইন আবেদনপত্র প্রসেসিং করা, জেলাভিত্তিক তালিকা তৈরি এবং ইন্টারভিউয়ের জন্য অ্যাটেন্ডেন্স শিট প্রস্তুত করার মতো প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তামূলক কাজ। AG দাবি করেন যে, বোর্ড নিয়ম মেনেই এই সহায়ক কাজের জন্য একটি এজেন্সিকে নিযুক্ত করেছিল।

বিচারপতির কড়া পর্যবেক্ষণ এবং অন্যান্য আবেদন

অ্যাডভোকেট জেনারেল বোর্ডের পক্ষে যুক্তি দিলেও, বিচারপতি এদিন দুর্নীতির বিষয়ে অত্যন্ত কড়া মনোভাব পোষণ করেন। শুনানির মাঝে তিনি “মানি ট্রান্সফার” বা অর্থ লেনদেনের প্রসঙ্গ তোলেন এবং ত্রিপুরার একটি মামলার উদাহরণ দেন।

দিনের শুরুতে একাধিক আবেদন (CAN) নিয়েও আলোচনা হয়। আইনজীবী সুদীপ্ত দাসগুপ্ত ‘র‍্যাঙ্ক জাম্পিং’-এর একটি তালিকা জমা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, শুধুমাত্র যাদের সিঙ্গল বেঞ্চে স্বাধীন রিট পিটিশন (Independent Writ Petition) ছিল, তাদের আবেদনই তিনি শুনবেন। এর মধ্যে একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিক্ষকের আবেদনও ছিল, যিনি তার চাকরি রক্ষার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন।

পরবর্তী শুনানি ও রায়ের অপেক্ষা

এদিনের মতো অ্যাডভোকেট জেনারেলের সওয়াল-জবাব পর্ব শেষ হয়েছে। বিচারপতি জানিয়েছেন, এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১১ এবং ১২ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ১২ই নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত পক্ষের সওয়াল শেষ করে মামলার রায়দান স্থগিত (Judgment Reserve) রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে। ফলে, এই দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ৩২ হাজার শিক্ষকের ভাগ্য কী হতে চলেছে, সেই চূড়ান্ত রায়ের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা রাজ্য।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন