School Crisis: পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক উদ্বেগজনক চিত্র ফুটে উঠেছে। রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে এই ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। তথ্য অনুযায়ী, বহু স্কুল চলছে মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে, আবার হাজার হাজার স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা তলানিতে এসে ঠেকেছে। এমনকি, শিক্ষার্থী না থাকায় বেশ কিছু স্কুল কার্যত বন্ধের মুখে। এই পরিসংখ্যান রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোর এক গভীর সঙ্কটকে নির্দেশ করছে।
প্রাথমিক শিক্ষার চিত্র
রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা তথ্যের নিরিখে বেশ উদ্বেগজনক। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষার চিত্রটি নিম্নরূপ:
- মোট স্কুল: ৬৬,৪৮৮
- মাত্র একজন শিক্ষক এমন স্কুল: ৫,৪৯৯
- ৩০ জনের কম শিক্ষার্থী: ১১,৯৫৫
- ১৫ জনের কম শিক্ষার্থী: ৮,০৫৫
- শিক্ষার্থী নেই: ৪৭১
উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষার চিত্র
প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে উচ্চ প্রাথমিক স্তরেও পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি। এখানকার চিত্রটাও প্রায় একই রকম হতাশাজনক। পরিসংখ্যান অনুযায়ী উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষার চিত্র:
- মোট স্কুল: ৩৪,২৬৬
- মাত্র একজন শিক্ষক এমন স্কুল: ৮৯১
- ৩০ জনের কম শিক্ষার্থী: ৫,৭৫৭
- ১৫ জনের কম শিক্ষার্থী: ৩,৭১০
- শিক্ষার্থী নেই: ২২৫
সঙ্কটের কারণ ও ভবিষ্যৎ
এই পরিসংখ্যান রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার এক গভীর সঙ্কটকে তুলে ধরছে। ৫,৪৯৯টি প্রাথমিক এবং ৮৯১টি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল চলছে মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে। এটি পঠনপাঠনের মানের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে, কারণ একজন শিক্ষকের পক্ষে একাধিক শ্রেণীর সমস্ত বিষয় সামলানো কার্যত অসম্ভব।
অন্যদিকে, হাজার হাজার স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা অত্যন্ত কম। ১১,৯৫৫টি প্রাথমিকে ৩০ জনের কম এবং ৮,০৫৫টি প্রাথমিকে ১৫ জনেরও কম পড়ুয়া রয়েছে। উচ্চ প্রাথমিকেও এই সংখ্যা যথাক্রমে ৫,৭৫৭ এবং ৩,৭১০। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, ৪৭১টি প্রাথমিক এবং ২২৫টি উচ্চ প্রাথমিক স্কুল সম্পূর্ণ শিক্ষার্থীশূন্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শিক্ষার্থীশূন্য এবং অত্যন্ত কম পড়ুয়া থাকা স্কুলগুলির ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে সরকারকে দ্রুত ভাবতে হবে। একদিকে যেমন শিক্ষক নিয়োগের দীর্ঘসূত্রিতা একটি বড় কারণ, তেমনই অভিভাবকদের সরকারি স্কুলের প্রতি আস্থাহীনতাও এই সঙ্কটের জন্য দায়ী হতে পারে। এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান না হলে রাজ্যের গ্রামীণ শিক্ষার বুনিয়াদ দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।