SIP Investment: বর্তমানে আইটি (IT), বিপিও (BPO), রিটেল বা ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মতো সেক্টরে ফ্রেশার বা নতুন চাকুরিজীবীদের জন্য মাসিক ৩০,০০০ টাকা বেতন একটি সাধারণ শুরুর ধাপ। এই পরিমাণ বেতনে সংসারের খরচ চালিয়ে টাকা জমানো অনেকের কাছেই অসম্ভব মনে হতে পারে। তবে চাকরি পাওয়ার পর প্রথম থেকেই যদি সঠিক আর্থিক পরিকল্পনা বা ফিন্যান্সিয়াল প্ল্যানিং করা যায়, তবে ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা সম্ভব। সামান্য পরিমাণ অর্থ দিয়ে বিনিয়োগ শুরু করলেও দীর্ঘমেয়াদে তা বড় অঙ্কের টাকা হয়ে উঠতে পারে।
মাসিক ৩০,০০০ টাকা বেতনে প্রথম ১ লক্ষ টাকা জমানোর লক্ষ্যটি প্রথমে কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা এবং স্মার্ট মানি ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে মাত্র ১২ মাসেই এই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। অত্যন্ত হিসেব করে চললে মাসে ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত বাঁচানো যেতে পারে, তবে বাস্তবসম্মতভাবে মাসে ৫,০০০ থেকে ৭,০০০ টাকা জমানো অনেকের পক্ষেই সম্ভব। মিউচুয়াল ফান্ডের মতো ইনস্ট্রুমেন্টে বিনিয়োগ করে এই লক্ষ্য পূরণ করা যেতে পারে।
এসআইপি (SIP)-র মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকা জমানোর ছক
আসুন দেখে নেওয়া যাক, প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান বা SIP-এর মাধ্যমে বিনিয়োগ করলে এক বছরে তা কত হতে পারে। এখানে ধরে নেওয়া হচ্ছে বার্ষিক রিটার্ন ১০%।
| মাসিক বিনিয়োগ | মোট বিনিয়োগ (১ বছরে) | আনুমানিক রিটার্ন (১০%) | ম্যাচুরিটি বা মোট টাকা |
|---|---|---|---|
| ৭,০০০ টাকা | ৮৪,০০০ টাকা | ৪,৬৯২ টাকা | ৮৮,৬৯২ টাকা |
| ১০,০০০ টাকা | ১.২ লক্ষ টাকা | ৬,৭০৩ টাকা | ১.২৬ লক্ষ টাকা |
| ১৫,০০০ টাকা | ১.৮ লক্ষ টাকা | ১০,০০০+ টাকা | ১.৯ লক্ষ টাকা |
উপরের ছক থেকে বোঝা যাচ্ছে, মাসে ৭,০০০ টাকা বিনিয়োগ করে ১২ মাসে ১ লক্ষ টাকার লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব নয়, কারণ এতে মোট জমার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৮৮,৬৯২ টাকা। কিন্তু যদি বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে মাসে ১০,০০০ টাকা করা যায়, তবে এক বছর শেষে ১.২৬ লক্ষ টাকা জমতে পারে, যা আপনার ১ লক্ষ টাকার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
খরচ নিয়ন্ত্রণ ও ইমার্জেন্সি ফান্ড
৩০,০০০ টাকা বেতনে মাসে ৮,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা জমানোর জন্য প্রয়োজন কঠোর খরচ নিয়ন্ত্রণ। এর জন্য যা করণীয়:
- বাজেট তৈরি: বাড়ি ভাড়া, খাওয়া-দাওয়া, যাতায়াত এবং অন্যান্য খরচের জন্য নির্দিষ্ট বাজেট তৈরি করুন।
- ইমার্জেন্সি ফান্ড: বিনিয়োগ শুরু করার আগে অন্তত ৬ মাসের খরচের সমপরিমাণ টাকা ‘ইমার্জেন্সি ফান্ড’ হিসেবে আলাদা রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।
- কমপাউন্ডিং-এর শক্তি: মিউচুয়াল ফান্ডে গড়ে ১০-১২% রিটার্ন পাওয়া গেলে, কমপাউন্ডিং-এর জাদুতে ছোট বিনিয়োগও বিশাল আকার ধারণ করতে পারে।
সতর্কীকরণ: শেয়ার বাজার বা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ সর্বদা বাজারগত ঝুঁকির অধীন। বিনিয়োগ করার আগে নিজের আর্থিক অবস্থা যাচাই করুন এবং প্রয়োজনে আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নিন। এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, বিনিয়োগের সুপারিশ নয়।














