SIR Documents List West Bengal: ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজের নাম খুঁজে না পেয়ে অনেকেই চিন্তায় রয়েছেন। এবার বুঝি ভোট দেওয়ার অধিকারটাই চলে গেল!
কিন্তু না, এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, এমন হলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বরং এবার শুরু হয়েছে এক বিশেষ প্রক্রিয়া, যাতে প্রত্যেক ভোটার নিজে যাচাই করতে পারবেন নিজের নাম তালিকায় সঠিকভাবে আছে কি না।
পশ্চিমবঙ্গসহ আরও কয়েকটি রাজ্যে মঙ্গলবার থেকেই শুরু হচ্ছে এই এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া। পুরনো তালিকা, বাবা-মায়ের নাম আর আধুনিক পরিচয়পত্র — সব মেলিয়ে দেখা হবে কার নাম ঠিকঠাক আছে, আর কারটা বাদ গেছে।
পশ্চিমবঙ্গে শুরু হচ্ছে নতুন ভোটার যাচাই
মঙ্গলবার থেকেই পশ্চিমবঙ্গে শুরু হচ্ছে এই এসআইআর প্রক্রিয়া। দ্বিতীয় ধাপে নয়টি রাজ্য ও তিনটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেও একইভাবে কাজ হবে।
এই সময়টা ভোটারদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনেক জায়গায় অভিযোগ এসেছে — জীবিত ভোটারদের নাম নাকি মৃত বলে কেটে ফেলা হচ্ছে! তাই এবার কমিশন চাইছে, যেন প্রতিটি ভোটার নিজে যাচাই করে নেয় নিজের নাম ভোটার তালিকায় আছে কি না।
আরও পড়ুন:- টোটো রেজিস্ট্রেশন অনলাইন আবেদন । Toto Registration Online
কমিশনের নির্দেশ কী বলছে?
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের মুখ্য কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন —
“২৭ অক্টোবর রাত ১২টার পর থেকে ভোটার তালিকা ‘ফ্রিজ’ করা হবে।”
অর্থাৎ ওই সময়ের পর আর কোনও পরিবর্তন করা যাবে না।
তার আগে প্রতিটি এলাকায় বিএলও (Booth Level Officer) গিয়ে ভোটারদের হাতে একটি এনুমারেশন ফর্ম দেবেন।
এই ফর্মে আপনার বর্তমান ভোটার তালিকার সব তথ্য থাকবে — নাম, বয়স, ঠিকানা ইত্যাদি।
পুরনো তালিকায় নাম না থাকলে কী করবেন?
জ্ঞানেশ কুমার জানিয়েছেন,
যদি কারও নিজের নাম ২০০২ সালের তালিকায় না থাকে, তাহলে তিনি দেখুন তাঁর বাবা বা মায়ের নাম ওই তালিকায় আছে কি না।
যদি অভিভাবকের নাম ২০০২ সালের তালিকায় থাকে —
তাহলে আলাদা করে কোনও নথি জমা দিতে হবে না।
যদি নিজের নাম বা অভিভাবকের নাম কোনওভাবেই না মেলে —
তাহলে কমিশন নির্ধারিত পরিচয়পত্র বা প্রমাণপত্র দিতে হবে, যাতে বোঝা যায় আপনি বৈধ ভারতীয় ভোটার।
কোন কোন নথি লাগবে?
কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, যাদের নাম পুরনো তালিকায় নেই বা মেলানো যাচ্ছে না, তাঁদের নিচের নথিগুলির মধ্যে যে কোনও একটি লাগতে পারে —
১. রাজ্য বা কেন্দ্র সরকারের কর্মচারী বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী হলে তার পরিচয়পত্র
২. আপনার নামে ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগের কোনও পরিচয়পত্র/সার্টিফিকেট/ডকুমেন্ট যা ভারত সরকার বা রাজ্য সরকার দিয়েছে। ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এলআইসির নথিও গ্রাহ্য হবে।
৩. জন্মের শংসাপত্র।
৪. ভারতের পাসপোর্ট।
৫. স্বীকৃত বোর্ড বা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া শিক্ষা সংক্রান্ত শংসাপত্র। মাধ্যমিকের সার্টিফিকেটও গ্রহণযোগ্য। যেখানে আপনার জন্মের সাল, তারিখ উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুন:- আপনার পূর্বপুরুষদের কত টাকা, সম্পত্তি রয়েছে চেক করুন | RBI Unclaimed Deposit Incentive Scheme
৬. রাজ্যের দেওয়া পার্মানেন্ট রেসিডেন্স সার্টিফিকেট।
৭. বনাঞ্চলে যাঁরা থাকেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বন অধিকার শংসাপত্র।
৮. ওবিসি/এসসি/এসটি বা অন্য কোনও কাস্টের হলে কাস্ট সার্টিফিকেট।
৯. জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা NRC (যেখানে চালু হয়েছে)।
১০. রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের তৈরি ফ্যামিলি রেজিস্টার।
১১. সরকারের দেওয়া জমির নথি, বাড়ির নথি। অর্থাৎ দলিল, পরচা।
কোথায় দেখা যাবে পুরনো ভোটার তালিকা?
কমিশন জানিয়েছে, ২০০২ থেকে ২০০৪ সালের ভোটার তালিকা এখন অনলাইনে পাওয়া যাবে।
ভোটাররা নিজেরাই যাচাই করতে পারবেন 👉
https://voters.eci.gov.in
সেখানে গিয়ে নাম, বাবা-মায়ের নাম বা ঠিকানা দিয়ে খুঁজে দেখা যাবে পুরনো তালিকায় আপনি বা আপনার পরিবারের কারও নাম আছে কি না।
ভোটারদের জন্য কমিশনের পরামর্শ
কমিশন বলেছে, “কোনও গুজবে কান দেবেন না। বিএলও-র হাতে পাওয়া ফর্মটি ভালো করে দেখে নিন, প্রয়োজন হলে সঙ্গে সঙ্গে তথ্য সংশোধন করে দিন।”
এছাড়াও ভোটারদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেন তাঁরা ২৭ অক্টোবরের আগে নিজের নাম যাচাই করে নেন, যাতে ভোটের সময় কোনও অসুবিধা না হয়।
সবশেষে
যদি ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় আপনার নাম না থাকে, ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
নিজের বাবা-মায়ের নাম বা পুরনো তালিকায় পরিবারিক সংযোগ দেখলেই চলবে।
আর যদি কোনওভাবে নাম না মেলে, তাহলে পরিচয়পত্র দেখিয়ে সহজেই নাগরিকত্ব প্রমাণ করা যাবে।
কমিশনের লক্ষ্য একটাই — কেউ যেন ভুল করে তালিকা থেকে বাদ না পড়ে।
আরও পড়ুন:- ভাতার টাকা বাড়ছে ১০০০ বদলে ১৫০০ টাকা হচ্ছে | Old Age Pension West Bengal
সমস্ত খবরের আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল এবং টেলিগ্রাম চ্যানেলে আপনারা যুক্ত হয়ে যান নিচের লিংকে ক্লিক করে
| টেলিগ্রাম গ্রুপ | জয়েন করুন |
| হোয়াটস্যাপ চ্যানেল | জয়েন করুন |














