SIR Voter List: রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision বা SIR) প্রক্রিয়া নিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় বড়সড় তথ্য জানাল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কলকাতা হাইকোর্টে শুনানির সময় কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যাদের নাম ছিল, এবারের SIR প্রক্রিয়ায় তাদের নতুন করে কোনও নথি জমা দিতে হবে না। এই ঘোষণায় রাজ্যের বহু মানুষ স্বস্তি পেয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় এই জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেন। মামলাকারীর বক্তব্য, তিনি SIR প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করছেন না, বরং এই প্রক্রিয়াটির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তিনি আদালতে জানান, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বুথ লেভেল অফিসাররা (BLO) হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন এবং তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন।
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য
আদালতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে। কমিশনের তরফে জানানো হয়:
- ২০০২ সালের ভোটার তালিকা: শেষবার ২০০২ সালে SIR হয়েছিল। সেই সময় যাদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল, এবারের সংশোধনীতে তাদের নতুন করে কোনো নথি দেখানোর প্রয়োজন নেই।
- আধার কার্ড: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আধার কার্ড পরিচয়পত্র হিসেবে দেখা হলেও, এটি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়।
- রিপোর্ট জমা: আদালত কমিশনকে ১৯ তারিখের মধ্যে SIR প্রক্রিয়া কীভাবে চলছে, সেই বিষয়ে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
মামলাকারীর আইনজীবী বিএলও-দের নিরাপত্তার দাবি জানালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, “সরকার জানে কী ভাবে তার কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে হয়। এর জন্য আলাদা করে কোনও নির্দেশ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।”
রাজনৈতিক চাপানউতোর
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে এই SIR প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত ৪ নভেম্বর থেকে বিএলও-রা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলির কাজ শুরু করেছেন। এই প্রক্রিয়া নিয়ে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, SIR-এর নামে মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিহারের উদাহরণ তুলে ধরে তারা জানায়, সেখানে SIR-এর পর প্রায় ৩০ লক্ষ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে।
অন্যদিকে, বিজেপির পাল্টা দাবি, এর মাধ্যমে ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটার, অনুপ্রবেশকারী এবং একাধিক জায়গায় নাম থাকা ভোটারদের বাদ দেওয়া হবে। তাদের আশ্বাস, কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ যাবে না।














