SSC Interview List: এসএসসি (SSC) একাদশ-দ্বাদশ স্তরের শিক্ষক নিয়োগের জন্য সম্প্রতি প্রকাশিত ইন্টারভিউ বা ভেরিফিকেশন লিস্টকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টে একটি নতুন মামলা দায়ের হয়েছে। এই তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন অসঙ্গতির অভিযোগ উঠছিল এবং অবশেষে তা আদালতের দরজায় পৌঁছাল। মামলাটি বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে মেনশন পর্বে উঠলে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে, যা শুনে বিচারপতিও বিস্ময় প্রকাশ করেন।
মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম আদালতে তালিকাটির একাধিক অসঙ্গতি বা ‘অ্যানোমালি’ তুলে ধরেন। এই অভিযোগগুলি চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি করেছে।
মামলার প্রধান অভিযোগগুলি কী কী?
আদালতে পেশ করা তথ্য অনুযায়ী, ইন্টারভিউ লিস্টে বেশ কিছু গুরুতর অসঙ্গতি রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সেগুলি হলো:
- ‘টেইন্টেড’ প্রার্থীদের নাম: সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও, তালিকায় দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত বা ‘টেইন্টেড’ প্রার্থীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
- নম্বর প্রদানে বেনিয়ম: এমন অনেক প্রার্থীকে অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়া হয়েছে যারা উচ্চ মাধ্যমিক (Higher Secondary) স্তরে শিক্ষকতা করেন না।
- অন্যান্য পেশার প্রার্থীদের সুবিধা: সবচেয়ে আশ্চর্যজনক অভিযোগ হলো, প্রাইমারি শিক্ষক এমনকি হেলথ কো-ওয়ার্কারদেরও (Health Co-workers) এই ১০ নম্বরের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। একজন স্বাস্থ্যকর্মী কীভাবে শিক্ষক নিয়োগে অভিজ্ঞতার নম্বর পান, এই প্রশ্ন শুনে বিচারপতিও অবাক হন।
- বয়স সংক্রান্ত প্রশ্ন: একজন প্রার্থীর জন্ম তারিখ ১৯৯৭ সাল হওয়া সত্ত্বেও তিনি কীভাবে অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর পেতে পারেন, সেই বিষয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অভিজ্ঞতার জন্য যে নির্দিষ্ট সময়কাল প্রয়োজন, তা ওই প্রার্থীর বয়সের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
আদালত কী নির্দেশ দিয়েছে?
বিচারপতি অমৃতা সিনহা মামলাটির গুরুত্ব অনুধাবন করে সব পক্ষের বক্তব্য শোনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামীকাল থেকে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, এই মামলার শুনানির জন্য আগামী ১৯ তারিখ (বুধবার) দিন ধার্য করা হয়েছে। বিচারপতি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে নোটিশ জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
চাকরিপ্রার্থীদের কি আতঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে?
এই নতুন মামলায় অনেক প্রার্থী উদ্বিগ্ন হলেও, আইন বিশেষজ্ঞদের মতে আতঙ্কিত হওয়ার বিশেষ কারণ নেই। সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী নির্দেশেই এর সমাধান রয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, যদি ভুলবশত কোনো অযোগ্য বা ‘টেইন্টেড’ প্রার্থী তালিকায় স্থান পেয়েও যান, তবে ভেরিফিকেশন বা যাচাইকরণ পর্বেই তাদের বাদ দেওয়া হবে। যেহেতু প্রার্থীরা আবেদনে যে তথ্য দিয়েছেন, তার ভিত্তিতেই কমিশন তালিকা তৈরি করেছে, তাই ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশনের সময় সঠিক নথি পেশ করতে না পারলে তারা এমনিতেই বাতিল হয়ে যাবেন। সুতরাং, এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীরাই চূড়ান্ত নিয়োগ পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
Follow Us














