স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) এর নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে আরও একবার কড়া অবস্থান নিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। একটি রিভিউ পিটিশন খারিজ করার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে জোরদার আলোচনা।
স্বচ্ছতার অভাব এবং আদালতের ভর্ৎসনা
২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের পর নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলেও, তাতেও স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত প্রশ্ন তুলেছে, কেন এসএসসি বারবার একই ভুল করছে? বিশেষত, “দাগী” বা অযোগ্য প্রার্থীদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার সুযোগ দেওয়া নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। আদালতের মতে, এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং স্বচ্ছতার পরিপন্থী।
প্রধান বিচার্য বিষয়গুলি
নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে, যেগুলি হলো:
- ন্যূনতম কাট-অফ মার্কস:
- ২০১৬ সালের নিয়মে স্নাতকের জন্য ন্যূনতম কাট-অফ ছিল ৪৫%।
- কিন্তু, বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এসএসসি সেই সীমা বাড়িয়ে ৫০% নির্ধারণ করে।
- সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, ৪৫% থেকে ৫০% এর মধ্যে নম্বর পাওয়া প্রার্থীরাও যেন এক সপ্তাহের মধ্যে আবেদন করতে পারে, অর্থাৎ ৪৫% কাট-অফই বহাল রাখতে হবে।
- অযোগ্য প্রার্থীদের আবেদন:
- সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ হলো, “দাগী” বা অযোগ্য প্রার্থীরাও নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করছেন।
- সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়েছিল যে ২০১৬ সালের পুরো প্যানেলটি স্বচ্ছতার অভাবে বাতিল করা হয়েছে। তার পরেও একই প্রার্থীদের আবেদন করার সুযোগ দেওয়ায় আদালত এসএসসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
- পরীক্ষার সময়সূচি:
- যোগ্য প্রার্থীরা পূজোর ছুটির পর পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন, কারণ তাঁরা বর্তমানে শিক্ষকতার কাজে নিযুক্ত এবং প্রস্তুতির জন্য সময় প্রয়োজন।
- তবে, এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করেনি এবং জানিয়েছে যে, এসএসসি তাদের সুবিধা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে।
- স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা:
- আদালত উল্লেখ করেছে যে, এসএসসি এবং রাজ্য সরকার বারবার “অযোগ্য” এবং “যোগ্য” প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই তালিকা প্রকাশ পেলে অযোগ্যদের থেকে টাকা উদ্ধার করা সহজ হতো।
- যদি সত্যিই অযোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করে থাকেন, তবে পরিস্থিতি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হবে বলে এসএসসিকে সতর্ক করেছে আদালত।