SSC Teaching Experience Marks: শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞতার জন্য বরাদ্দ ১০ নম্বরকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টে এক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হল, যেখানে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র সওয়াল জবাব দেখা যায়। Untainted শিক্ষকদের পক্ষ এবং এই নম্বরের বিরোধিতাকারী চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষ নিজ নিজ যুক্তিতে অনড় থাকেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয়েছে আগামী ১২ই নভেম্বর।
শুনানির শুরুতে, Untainted শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বর্ষীয়ান আইনজীবী অনিন্দ্য কুমার মিত্র সওয়াল করেন। তিনি অভিজ্ঞতার গুরুত্ব বোঝাতে একটি সহজ উদাহরণ তুলে ধরেন। তাঁর মতে, “একজন ফুটবল খেলোয়াড়ের যদি ক্লাবে খেলার অভিজ্ঞতা থাকে, তবেই সে ভারতীয় দলে সুযোগ পায়। একইভাবে, শিক্ষকতার ক্ষেত্রেও অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, ফ্রেশাররা বঞ্চিত হবে কেন, এই যুক্তিতে অভিজ্ঞদের সুযোগ না দেওয়াটা অনুচিত। তাঁর মতে, আবেদনকারীরা বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ না করে পরীক্ষা দিয়েছেন এবং এখন দেরিতে এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, যা ঠিক নয়।
টেকনিক্যাল পয়েন্ট ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
আইনজীবী পথিক ধর মহাশয় মামলাটিকে একটি নতুন দিকে নিয়ে যান। তিনি বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের “নাল অ্যান্ড ভয়েড” (Null and Void) যুক্তিকে খণ্ডন করে বলেন, এখানে এই কথাটি প্রযোজ্য নয়। কারণ, আদালত ইতিমধ্যেই প্রথম সার্ভিসে থাকা কিছু শিক্ষকের চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে এবং তাদের সিনিয়রিটি বজায় রাখতে বলেছে। এই শিক্ষকেরা ইতিমধ্যে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, যা একজন ফ্রেশার প্রার্থীর নেই।
তিনি বলেন, একাডেমিক যোগ্যতা প্রথম শর্ত হলেও, ৮-১০ বছরের অভিজ্ঞতা একজন প্রার্থীকে অনেকটাই এগিয়ে রাখে। তিনি সুপ্রিম কোর্টের একটি পুরনো রায়ের উল্লেখ করে বলেন, যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে অভিজ্ঞ প্রার্থীদের এগিয়ে রাখা যেতে পারে এবং এটি সংবিধানের ১৪ নং ধারার লঙ্ঘন নয়।
কমিশনের বক্তব্য ও পরবর্তী পদক্ষেপ
কমিশনের পক্ষ থেকে আইনজীবী বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, মামলাকারীরা অনেক দেরিতে আদালতে এসেছেন। যখন নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে, তখন তারা এই ১০ নম্বর নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেন? তিনি ‘অরুনিমা পাল’ মামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন যে, সেখানে এই বিষয়টি ইতিমধ্যেই নিষ্পত্তি হয়েছে।
মামলার শুনানি চলাকালীন বিভিন্ন পক্ষের আইনজীবীরা তাদের যুক্তি তুলে ধরেন। মেনুকা গ্রুপের আইনজীবী বলেন, এটি একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত (Policy Decision) এবং এতে বিচারবিভাগের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। শিক্ষা দপ্তর এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতেই পারে।
সব পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর আদালত এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ১২ই নভেম্বর ধার্য করেছে। সেদিন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে, অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর নিয়ে এই আইনি লড়াই এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে, যার রায়ের দিকে তাকিয়ে আছেন হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী।














