Bangla News Dunia, Pallab : নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) বিরুদ্ধে সিবিআই-র বিশেষ আদালতে ফের গুরুতর অভিযোগ তুলল ইডি। সম্প্রতি নিয়োগ মামলার পঞ্চম অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে আদালতে। সেখানে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর বিরূদ্ধে জানানো হয় যে একাধিক সংস্থার মাধ্যমে পার্থ ‘আর্থিক তছরুপ’ করে এসেছেন। কি ভাবে, কোন কৌশলে কালো টাকা সাদা করতেন, তার বিশদ বর্ণনা দেওয়া হয়েছে চার্জশিটে। আর সেই উপায় হল ফ্ল্যাট বুকিং। ED-র দাবি এই ফ্ল্যাট বুকিং এর মাধ্যমে টাকা বিনিয়োগ করে কালো টাকা সাদা করতেন তিনি।
আরো পড়ুন:– কেন ভারতের অর্থনীতির উন্নয়নের ‘গুরুঠাকুর’ বলা হয় মনমোহন সিং-কে ? জানুন বিস্তারিত
ফ্ল্যাট বুকিং সংক্রান্ত বিস্ফোরক অভিযোগ ED র!
জানা গিয়েছে, একাধিক ব্যক্তিকে ফ্ল্যাট বুকিং সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল আর তার জেরেই এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় নাকি বহু নির্মাণ সংস্থাকে অগ্রিম দিয়ে রেখেছিলেন। কলকাতা এবং শহরতলিতে একাধিক ফ্ল্যাট বুক করে রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও ফ্ল্যাটের জন্যই পুরো টাকা দেননি। এদিকে ফ্ল্যাট সংক্রান্ত লেনদেনের জন্য পার্থ দু’টি সংস্থার মালিকানা গ্রহণ করেছিলেন। যার মধ্যে একটি হল ইমপ্রোলাইন কনস্ট্রাকশনস প্রাইভেট লিমিটেড এবং অপরটি হল এইচআরআই ওয়েল্থ ক্রিয়েশন রিয়েলটর্স প্রাইভেট লিমিটেড। এই দুই সংস্থাই ছিল পার্থের ডান ও বাম হাত।
ED র সেই চার্জশিটে জানা গিয়েছে কোনও ফ্ল্যাট বুকিংয়ের ক্ষেত্রেই পার্থ নিজের নাম ব্যবহার করতেন না। রাজীব দে নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে তিনি ফ্ল্যাট সংক্রান্ত কাজ করাতেন। এবং রাজীবের নামেই ফ্ল্যাটগুলি কেনা হত। আর এই কথাটা স্বীকার করে নেয় রাজীব। এছাড়াও চার্জশিটে সন্দেহ বাড়াচ্ছে আরও একটি মহিলার নাম। অর্পিতা ছাড়াও সুরঞ্জিতা জানা নামের এক মহিলার নামও উল্লেখ করেছে ইডি। তিনি হলেন পার্থের ফ্ল্যাট সংক্রান্ত সংস্থাগুলির ডিরেক্টর। ফ্ল্যাট বুকিংয়ের কাগজপত্রেও স্বাক্ষর করতেন তিনি। অন্যদিকে ইমপ্রোলাইন কনস্ট্রাকশনস প্রাইভেট লিমিটেড এবং এইচআরআই ওয়েল্থ ক্রিয়েশন রিয়েলটর্স প্রাইভেট লিমিটেড কোথাও ৫ লক্ষ টাকা, কোথাও ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু নির্মাতাদের অভিযোগ, ফ্ল্যাটের বাকি অর্থ তাঁরা আর হাতে পাননি।
কেন অর্ধেক টাকা বিনিয়োগ করতেন প্রতি ফ্ল্যাটে?
ইতিমধ্যে ইমপ্রোলাইনের জমি এবং টাকা বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইডি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে এত টাকা থাকতে কেন পুরো টাকা ফ্ল্যাট কেনার কাজে ব্যবহার করতেন না। ইডি সূত্রে দাবি, একটি ফ্ল্যাট কিনে তার জন্য কোটি টাকা খরচ না-করে ধীরে ধীরে অল্প অল্প টাকা দিয়ে একাধিক ফ্ল্যাট বুকিং করে রাখার সুবিধা ছিল বেশি। এতে টাকার ‘সদ্ব্যবহার’ও হয়, আবার নিজের সম্পত্তির পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। সেই কারণেই পার্থ এই কৌশল অবলম্বন করেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।