Teachers TET Exemption: ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের টেট (TET) সংক্রান্ত ঐতিহাসিক রায়ের পর দেশের শিক্ষা মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এই রায়ের পরবর্তী সময়ে শিক্ষক সমাজের নজর ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপের দিকে। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের পক্ষ থেকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিক্রিয়া সামনে এসেছে। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, বিজেপি সাংসদ অরুণ কুমার সাগরের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে মিলিত হন শিক্ষামন্ত্রী, যেখানে শিক্ষকদের টেট সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের সমস্যা এবং তার সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
টেট থেকে অব্যাহতির জোরালো দাবি
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাতের সময় সাংসদ অরুণ কুমার সাগর উত্তরপ্রদেশের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি বা মেমোরেন্ডাম জমা দেন। এই স্মারকলিপিতে শিক্ষকদের স্বার্থে বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান দাবিটি হলো নিযুক্তির সময়সীমা সংক্রান্ত।
দাবিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ২৯শে জুলাই ২০১১-এর আগে যে সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষক নিযুক্ত হয়েছেন, তাঁদের জন্য টেট (TET) পাসের প্রয়োজনীয়তা থেকে সম্পূর্ণ অব্যাহতি দেওয়া হোক। যুক্তিস্বরূপ বলা হয়েছে, উল্লিখিত তারিখের আগে যখন এই শিক্ষকরা চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, তখন টেট পাসের কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা বা নিয়ম ছিল না। তাই পরবর্তী সময়ে তৈরি হওয়া নিয়ম তাঁদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া অন্যায্য।
শিক্ষকদের বর্তমান সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, বর্তমানে পুরনো শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও টেট বাধ্যতামূলক করার ফলে তাঁরা নানাবিধ পেশাগত ও আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। মূলত দুটি প্রধান ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে:
- বেতন ও ভাতা: টেট উত্তীর্ণ না হওয়ার কারণে বহু অভিজ্ঞ শিক্ষকের বেতন বৃদ্ধি, নানাবিধ সরকারি ভাতা এবং অন্যান্য মৌলিক সুযোগ-সুবিধা আটকে যাচ্ছে বা প্রভাবিত হচ্ছে।
- পদোন্নতি বা প্রোমোশন: দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র নতুন টেট নিয়মের জাঁতাকলে পড়ে অনেক শিক্ষকের পদোন্নতি বা প্রমোশন আটকে রয়েছে, যা তাঁদের কর্মজীবনে হতাশার সৃষ্টি করছে।
শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস ও নির্দেশিকা
সাংসদ অরুণ কুমার সাগরের বক্তব্য অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শোনার পর, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি সাংসদকে আশ্বস্ত করেছেন যে সরকার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে। জানা গিয়েছে, শিক্ষামন্ত্রী ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি করেছেন যাতে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা যায়।
সাংসদ অরুণ কুমার সাগর শিক্ষামন্ত্রীর এই পদক্ষেপে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং তিনি আশাবাদী যে, খুব শীঘ্রই দেশের অগণিত শিক্ষক এই দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন এবং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন।
যদিও সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে একটি ইতিবাচক আবহ তৈরি হয়েছে, তবুও যতক্ষণ না পর্যন্ত সরকারিভাবে লিখিত নির্দেশিকা বা সার্কুলার জারি হচ্ছে, ততক্ষণ পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ২৯শে জুলাই ২০১১-এর আগে নিযুক্ত শিক্ষকদের টেট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে কি না, এবং হলে তা কবে থেকে কার্যকর হবে, এখন সেটাই দেখার বিষয়। তবে কেন্দ্রীয় স্তরে এই নড়াচড়া নিঃসন্দেহে শিক্ষক মহলে নতুন আশার আলো জাগিয়েছে।














