Tet Mandatory: সংসদে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করলেন সাংসদ ইমরান মাসুদ, যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দেশের প্রায় ২০ লক্ষ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক এক নির্দেশের ফলে দেশজুড়ে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকদের চাকরির স্থায়িত্ব নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। এই জটিল পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দ্রুত আইনি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের ওই সাংসদ।
সুপ্রিম কোর্টের রায় ও শিক্ষকদের আশঙ্কা
সম্প্রতি ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্ট একটি নির্দেশ দেয়, যেখানে স্পষ্ট করা হয়েছে যে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শিক্ষকের জন্য শিক্ষক যোগ্যতা পরীক্ষা বা টেট (TET) পাশ করা বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে শিক্ষকের নিয়োগ কবে হয়েছে, তা বিচার্য নয়। অর্থাৎ, পুরনো নিয়মে নিযুক্ত শিক্ষকদেরও নতুন করে এই যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হতে পারে।
সাংসদ ইমরান মাসুদের বক্তব্য অনুযায়ী, আদালতের এই রায়ের ফলে এক লহমায় প্রায় ২০ লক্ষ শিক্ষকের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিশেষ করে যারা ‘কোয়ালিফাইড’ এবং ‘এক্সেম্পটেড’ বা ছাড়প্রাপ্ত শ্রেণিতে ছিলেন, তাদের চাকরির বৈধতা এখন সংকটের মুখে। আরটিই (RTE) অ্যাক্ট ২০০৯ এবং এনসিটিই (NCTE) এর ২০১০ সালের বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে যারা সম্পূর্ণ বৈধভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, তারাও আজ প্রবল মানসিক উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
তারিখের গেরো ও আইনি জটিলতা
সাংসদ তাঁর বক্তব্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আইনি ও বাস্তবিক দিকের প্রতি আলোকপাত করেন। তিনি জানান, শিক্ষার অধিকার আইন বা টেট এর নিয়ম দেশের সব রাজ্যে একই দিনে কার্যকর হয়নি। বিষয়টি বোঝাতে তিনি উদাহরণ দেন যে, উত্তরপ্রদেশে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছিল ২০১১ সালের ২৭ জুলাই।
কিন্তু শীর্ষ আদালতের সাম্প্রতিক রায়ে এই সময়সীমার ভিন্নতাকে বা নিয়োগের তারিখকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে বহু বছর ধরে সম্মানের সঙ্গে চাকরি করা শিক্ষকদের হঠাৎ করেই ‘অসুরক্ষিত’ অবস্থানে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সাংসদের মতে, এর ফলে শিক্ষকদের মনোবলে চিড় ধরবে এবং বিদ্যালয় শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সরকারের কাছে তিন দফা দাবি
শিক্ষকদের এই গভীর সংকট থেকে মুক্তি দিতে এবং তাদের জীবিকা সুরক্ষিত করতে সাংসদ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট তিনটি দাবি পেশ করেছেন:
- ভবিষ্যৎমুখী প্রয়োগ: আদালতের এই নির্দেশ যেন পুরনো শিক্ষকদের ওপর কার্যকর না করা হয়। এটি শুধুমাত্র ভবিষ্যতের নিয়োগের ক্ষেত্রে বা বাড়তি সুবিধা হিসেবে গণ্য করা হোক, যাতে পুরনো শিক্ষকদের চাকরির নিরাপত্তা বজায় থাকে।
- রিভিউ পিটিশন: সরকার যেন অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্টে এই রায়ের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার আবেদন বা রিভিউ পিটিশন (Review Petition) দাখিল করে।
- আইন সংশোধন: প্রয়োজনে শিক্ষার অধিকার আইন ২০০৯ এ সংশোধন আনা হোক, যাতে শিক্ষকদের সম্মান, অধিকার এবং চাকরির সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।
কেন্দ্রীয় সরকার এই দাবির প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষক।














