TET Mandatory: কর্মরত শিক্ষকদের চাকরি এবং পদোন্নতির জন্য টেট (TET) পাশ কি বাধ্যতামূলক? এই একটি প্রশ্নই দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। সুপ্রিম কোর্টের গত ১লা সেপ্টেম্বরের একটি রায়ের পর থেকেই এই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আজ, সোমবার (১৭ নভেম্বর ২০২৫), এই সংক্রান্ত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি হতে চলেছে শীর্ষ আদালতে, যার দিকে তাকিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশের শিক্ষা মহল।
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBPE) যেখানে এই রায়ের বিরুদ্ধে একটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে, সেখানেই উত্তরপ্রদেশের একটি শিক্ষক সংগঠন সরাসরি রিট পিটিশনের মাধ্যমে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে।
আজকের শুনানির মূল বিষয়
আজকের মামলাটি দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশের ‘ইউনাইটেড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’। এটি কোনো পুনর্বিবেচনার আবেদন নয়, বরং সম্পূর্ণ নতুন একটি রিট পিটিশন (Writ Petition)। সুপ্রিম কোর্টের তালিকা অনুযায়ী, মামলাটি আজ ৮ নম্বর সিরিয়ালে শুনানির জন্য উঠবে। মামলাকারীরা মূলত দুটি প্রধান যুক্তির ভিত্তিতে আইনি লড়াই চালাচ্ছেন:
- নিয়োগের সময়কার নিয়ম: শিক্ষকদের যুক্তি হলো, যখন তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছিল, তখন টেট পাশের কোনো শর্ত ছিল না। তাহলে এখন কেন পুরনো চাকরিতে নতুন নিয়ম চাপিয়ে টেট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে?
- আইনি চ্যালেঞ্জ: মামলাকারীরা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (NCTE)-এর ২০১৭ সালের একটি সংশোধনী এবং শিক্ষার অধিকার আইন (Right to Education Act)-এর কিছু নির্দিষ্ট ধারাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।
এই মামলাটি ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া, এনসিটিই এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। আবেদনকারীদের বিশ্বাস, যদি এই পিটিশন খারিজও হয়ে যায়, তাহলেও তাদের কাছে বৃহত্তর বেঞ্চে (Larger Bench) যাওয়ার সুযোগ থাকবে।
মামলার প্রেক্ষাপট এবং পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা
এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ১লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এর সেই ঐতিহাসিক রায়। ওই রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছিল যে, চাকরি বজায় রাখতে এবং পদোন্নতির জন্য টেট পাশ করা বাধ্যতামূলক।
- ১লা সেপ্টেম্বরের নির্দেশ: আদালত নির্দেশ দেয়, যে সমস্ত কর্মরত শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ পাঁচ বছরের বেশি বাকি আছে, তাঁদের অবশ্যই টেট পাশ করতে হবে।
- রাজ্যের পদক্ষেপ: এই রায়ের পরে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কর্মরত শিক্ষকদের স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টে একটি রিভিউ পিটিশন দাখিল করে। পর্ষদের উদ্দেশ্য ছিল এই রায় পুনর্বিবেচনা করিয়ে রাজ্যের শিক্ষকদের স্বস্তি দেওয়া।
- তথ্য সংগ্রহে বিভ্রান্তি: এর আগে পর্ষদের পক্ষ থেকে জেলাওয়াড়ি শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক ধোঁয়াশা ও উদ্বেগ তৈরি হয়।
আজকের দিনটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
আজকের এই রিট পিটিশনের শুনানি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ১লা সেপ্টেম্বরের রায়ের পর এটিই প্রথম কোনো বড় মামলা, যা সরাসরি সেই রায়ের আইনি ভিত্তি এবং যৌক্তিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আজকের শুনানির ফলাফল বা আদালতের পর্যবেক্ষণ পশ্চিমবঙ্গের রিভিউ পিটিশনের ভবিষ্যৎ গতিপথকেও প্রভাবিত করতে পারে। তাই আজকের শুনানির দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন দেশের হাজার হাজার শিক্ষক। শুনানির বিস্তারিত তথ্য পেলেই আমরা তা আপনাদের সামনে তুলে ধরব।














