WB LTC Rule: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য বছর শেষের এক দুর্দান্ত সুখবর নিয়ে এল অর্থ দপ্তর। দীর্ঘদিন ধরে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণের ক্ষেত্রে লিভ ট্রাভেল কনসেশন (LTC) সংক্রান্ত যে জটিলতা ছিল, তা এবার দূর করা হলো। রাজ্য সরকারের অর্থ দপ্তরের (অডিট ব্রাঞ্চ) পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক নতুন বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, এখন থেকে সরকারি কর্মচারীরা আন্দামান ভ্রমণে বিমানে যাতায়াত করলে তার পুরো ভাড়াই সরকারের কাছ থেকে ফেরত পাবেন। ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত মেমো নম্বর 4670-F(P2)-এর মাধ্যমে এই নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
এতদিন পর্যন্ত ২০০৫ সালের নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা প্রতি ১০ বছরের ব্লকে একবার শিপিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া পরিচালিত জাহাজে করে আন্দামান যাওয়ার জন্য এলটিসি (LTC) সুবিধা পেতেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে জাহাজে যাতায়াত সময়সাপেক্ষ এবং অনিয়মিত হওয়ার কারণে তা অনেকের কাছেই অসুবিধাজনক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকেই বিমানে যাতায়াত করছিলেন। কিন্তু সমস্যা ছিল ভাড়ার বিলে। বিমানে যাতায়াত করলেও ভাড়ার রিইম্বার্সমেন্ট বা প্রতিদান পাওয়া যেত জাহাজের ভাড়ার সমতুল্য অর্থ, যা নিয়ে প্রায়শই ধোঁয়াশা তৈরি হতো।
নতুন নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছে?
রাজ্যপাল এই বিষয়টি বিবেচনা করে ২০০৫ সালের পুরনো নিয়মে আংশিক পরিবর্তন আনার নির্দেশ দিয়েছেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যে সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারী আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে এলটিসি (LTC)-র সুবিধা নিয়ে ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক, তাঁরা এখন থেকে ইকোনমি ক্লাসে (Economy Class) বিমানে যাতায়াত করতে পারবেন এবং টিকিটের প্রকৃত মূল্যই দাবি করতে পারবেন। তবে এর জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত মানতে হবে।
বিমান ভাড়া পাওয়ার শর্তাবলী
অর্থ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বিমানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত শর্তগুলি অবশ্যই পূরণ করতে হবে:
- যাত্রা শুরুর স্থান: কর্মচারীকে তাঁর কর্মস্থল বা হেডকোয়ার্টার্সের নিকটবর্তী ভারতের কোনো বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করতে হবে।
- এয়ারলাইন্স নির্বাচন: যাত্রাটি অবশ্যই কোনো ‘ন্যাশনাল ক্যারিয়ার’ অথবা ভারতীয় বেসরকারি এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে করতে হবে, যাদের শ্রী বিজয় পুরম (পূর্বতন পোর্ট ব্লেয়ার)-এ সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে।
- টিকিট বুকিং: বিমানের টিকিট সরাসরি সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের বুকিং কাউন্টার অথবা তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে বুক করতে হবে। কোনো থার্ড-পার্টি অ্যাপ বা এজেন্টের মাধ্যমে বুকিং গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে।
- ভাড়ার সীমা: রিইম্বার্সমেন্ট বা প্রতিদান হিসেবে যে অর্থ পাওয়া যাবে, তা টিকিটে উল্লিখিত প্রকৃত বিমান ভাড়ার (Actual Air Fare) মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
জাহাজে যাওয়ার বিকল্প কি বন্ধ হলো?
না, জাহাজে যাওয়ার বিকল্পটি পুরোপুরি বন্ধ করা হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, যদি কোনো কর্মচারী চান, তবে তিনি ২০০৫ সালের নিয়ম এবং ২০২৪ সালের মেমো নম্বর 4784-F(P2) অনুযায়ী জাহাজে করেও যাতায়াত করতে পারেন। অর্থাৎ, জাহাজ বা বিমান—কর্মচারীরা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী যেকোনো একটি মাধ্যম বেছে নিতে পারবেন।
এই নতুন নির্দেশিকা জারির তারিখ অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকেই কার্যকর বলে গণ্য হবে। অর্থ দপ্তরের এই সিদ্ধান্তে স্বভাবতই খুশির হাওয়া সরকারি কর্মচারী মহলে। বিশেষ করে শ্রী বিজয় পুরম (পোর্ট ব্লেয়ার) যাওয়ার ক্ষেত্রে জাহাজের অনিয়মিত পরিষেবার ঝক্কি থেকে মুক্তি এবং বিমানে দ্রুত যাতায়াতের আর্থিক সুবিধা মেলায় ভ্রমণের পরিকল্পনা করা এখন অনেক সহজ হবে।
Download Order [PDF]







