WBSSC Supreme Court Case: পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ও আইনি জটিলতার মাঝেই ফের এক বড়সড় খবর সামনে এল। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার কড়া নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার সোজা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে নেওয়া কমিশনের এই পদক্ষেপ রাজ্যের হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। বিশেষ করে ২০২৫ সালের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের আশায় থাকা প্রার্থীদের জন্য এই খবর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আইনি জট যেন কাটছেই না। গত ৩রা ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা মানতে নারাজ কমিশন। তাই কালবিলম্ব না করে মাত্র দুদিনের মধ্যেই দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দরজায় কড়া নেড়েছে তারা। এই মামলার গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করছে বহু প্রার্থীর ভবিষ্যৎ।
মামলার খুঁটিনাটি ও বর্তমান স্থিতি
এসএসসি গত ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে সুপ্রিম কোর্টে এই স্পেশাল লিভ পিটিশন (SLP) ফাইল করেছে। মামলাটি বর্তমানে ডায়রি নম্বর ৭০১৬৯/২০২৫ হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে এবং শুনানির অপেক্ষায় পেন্ডিং অবস্থায় আছে। কমিশনের এই তড়িঘড়ি পদক্ষেপে স্পষ্ট যে, হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে তারা যথেষ্ট চাপে ছিল।
নীচে মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি টেবিলের আকারে দেওয়া হলো:
| বিবরণ | তথ্য |
|---|---|
| ডায়েরি নম্বর | ৭০১৬৯/২০২৫ |
| পিটিশনার | ওয়েস্ট বেঙ্গল সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন (WBSSC) |
| রেসপন্ডেন্ট | সুবির সরকার ও অন্যান্য |
| ফাইলের তারিখ | ০৫/১২/২০২৫ |
| বর্তমান স্ট্যাটাস | পেন্ডিং (Pending) |
হাইকোর্টের কোন নির্দেশে কমিশনের আপত্তি?
গত ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা ডব্লিউপিএ ২৭৬৪৮/২০২৫ (WPA 27648 of 2025) মামলায় এক তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিয়েছিলেন। সেই রায়ে কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্যানেলে থাকা ‘অকলঙ্কিত’ বা যোগ্য প্রার্থীদের (Untainted Candidates) তালিকা অবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে।
বিচারপতি সিনহার নির্দেশের মূল বিষয়গুলো ছিল নিম্নরূপ:
- স্বচ্ছ তালিকা প্রকাশ: কমিশনকে সেই সব প্রার্থীদের নাম জানাতে হবে যাদের নিয়োগে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
- আবেদনের সুযোগ: এই তালিকা প্রকাশের উদ্দেশ্য ছিল যাতে এই যোগ্য প্রার্থীরা ২০২৫ সালের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারেন।
- কড়া সময়সীমা: আদালত জানিয়েছিল, যদি ৮ই ডিসেম্বরের (আবেদনের শেষ তারিখ) মধ্যে কমিশন এই তালিকা প্রকাশ না করে, তবে ‘আনটেন্টেড’ প্রার্থীদের বয়সের ছাড় দিয়ে নতুন নিয়োগে বসার সুযোগ দিতে হবে।
চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ এখন কোন পথে?
কমিশনের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ফলে হাইকোর্টের সেই নির্দেশের বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। ৮ই ডিসেম্বর নতুন নিয়োগের আবেদনের শেষ তারিখ। তার আগেই সুপ্রিম কোর্ট কোনো নির্দেশ দেয় কি না, সেদিকেই তাকিয়ে আছেন সকলে।
এই পরিস্থিতিতে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য কিছু বিষয় লক্ষণীয়:
- যোগ্য প্রার্থীদের লড়াই: যারা নিজেদের ‘অকলঙ্কিত’ বলে মনে করেন, তাদের আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
- নতুন নিয়োগে জটিলতা: ২০২৫-এর নিয়োগে অভিজ্ঞতার জন্য নম্বর বিভাজন এবং প্যানেলের মেয়াদ নিয়ে এমনিতেই ধোঁয়াশা রয়েছে। তার ওপর এই নতুন মামলা প্রক্রিয়াটিকে আরও দীর্ঘায়িত করতে পারে।
- পরামর্শ: আইনজ্ঞদের মতে, প্রার্থীদের উচিত সুপ্রিম কোর্টের শুনানির দিকে নজর রাখা এবং প্রয়োজনে নিজেদের দাবি পেশ করার জন্য আইনি পরামর্শ নেওয়া।
আপাতত সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় কী রায় দেয় বা হাইকোর্টের নির্দেশে কোনো স্থগিতাদেশ জারি করে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।














