West Bengal SIR: রাজ্যে উৎসবের মরসুমের মধ্যেই কি চালু হতে চলেছে ভোটার তালিকা সংশোধনের বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর (SIR)? নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ১৫ই অক্টোবরের মধ্যেই যাবতীয় কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তোলপাড়। একদিকে যখন রাজ্য দুর্গতদের নিয়ে উদ্বিগ্ন, অন্যদিকে তখন উৎসবের মরসুম। এমন পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি করে এসআইআর চালু করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এসআইআর নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তৎপরতা
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলায় এসআইআর চালু করার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বিহারে এসআইআর-এর জন্য সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন কমিশনের আধিকারিকরা। বাংলায় সেই লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার। ডেপুটি নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে কমিশনের একটি দল ইতিমধ্যেই কলকাতা সফর করেছে এবং ইঙ্গিত মিলেছে যে ১৫ই অক্টোবরের পরেই এই কর্মসূচি শুরু হতে পারে। বিজ্ঞপ্তির পর তিন-চার দিনের মধ্যে অন্তত ২০ শতাংশ এনিউমারেশন ফর্ম ছাপানো সম্ভব কিনা, সেই প্রস্তুতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাজনৈতিক তরজা
এসআইআর নিয়ে ইতিমধ্যেই শাসক-বিরোধী তরজা তুঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, “রাজ্যে একদিকে দুর্যোগ, অন্যদিকে উৎসব, কীভাবে ১৫ দিনে এসআইআর সম্ভব?” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, বিজেপির নেতারা বাংলা থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার কথা বলছেন। নির্বাচন কমিশন কি বিজেপির হয়ে কাজ করছে, নাকি গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।
অন্যদিকে, বিরোধীদের দাবি, রাজ্যে প্রচুর ভুয়ো ভোটার রয়েছে এবং এসআইআর সেই সমস্ত ‘ভূত’ তাড়াতে সাহায্য করবে। তাদের মতে, নির্বাচন কমিশন নিজের পদ্ধতি মেনেই কাজ করছে এবং এতে সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।
এসআইআর কী এবং কেন?
এসআইআর বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন অফ ইলেক্টোরাল রোলস হল একটি বিশেষ কর্মসূচি যার মাধ্যমে ভোটার তালিকা সংশোধন করা হয়। এর মাধ্যমে নতুন ভোটারদের নাম তোলা, মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া এবং ভোটার তালিকার অন্যান্য ভুল সংশোধন করা হয়। নির্বাচন কমিশনের মতে, একটি স্বচ্ছ এবং ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত করার জন্য এই কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনের এই তৎপরতা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন দেখার, ১৫ই অক্টোবরের পর রাজ্যে সত্যিই এসআইআর চালু হয় কিনা এবং তা রাজ্য রাজনীতিতে নতুন কোন সমীকরণের জন্ম দেয়।